ঘরেই বানান মজাদার টারটার সস

কীভাবে বাড়িতে টারটার সস তৈরি করা যায়, তা আপনি একবার শিখে গেলে, আর কখনও দোকানে কিনতে যাবেন না! এই হালকা ধরনের সসটি অনেক ক্রিমি, টক-মিষ্টি এবং সুস্বাদু।

যখন আমি জ্যাককে বললাম যে, আমি আজকে ঘরে তৈরি টারটার সস বানাবো, তখন সে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, “ওহ, তুমি কি এটাতে ক্রিম অফ টারটার ( এক ধরনের বেকিং উপাদান যা প্রায়ী গৃহস্থালির ক্লিনার কাজে ব্যবহৃত হয়) দিচ্ছো?”  আমি হাসিতে ফেটে পরলাম, কিন্তু সত্যিই তার ভুলের জন্য তাকে দোষ দেওয়া যায় না। টারটার সস ক্রিমি ধরনের হয়। তাই অনেকেই ভেবে নেয়, এটা ক্রিম অফ টারটার দিয়ে বানায়!

মজাদার টারটার সস
মজাদার টারটার সস

আসলে, এই দুইটি জিনিসের একটার আরেকটার সাথে কোনো যোগাযোগই নেই। ক্রিম অফ টারটার হল একটি পাউডার জাতীয় বেকিং উপাদান যা সাধারণত কুকিজ বা মেরাং কুকিজে পাবেন। অন্যদিকে টারটার সস হলো অত্যন্ত সুস্বাদু, টকমিষ্টি একটা সস। এটি সাধারণত সামুদ্রিক খাবারের সাথে খাওয়া হয়, তবে বিশ্বাস করুন – এই সুস্বাদু সসটি আরও অনেক কিছুর সাথে খেতে পারবেন। ইদানীং, আমি এটিকে আমার ক্রিস্পি ফুলকপি ভাজির সাথে ডিপ সস হিসাবে খেয়েছি।  আমরা এটা স্যান্ডউইচের সাথে সস হিসেবে, সিদ্ধ আলুতে, বা গ্রিল করা শাকসবজির সাথে ব্যবহার করি। নীচের পোস্টে আরও কিভাবে এটাকে পরিবেশন করা যায়, সেই বিষয়ে পরামর্শ পাবেন। কিন্তু সত্যিই, যখনই আপনার মনে হবে যে কোনও খাবারের জন্য একটি সমৃদ্ধ, টক মিষ্টি স্বাদের প্রয়োজন, আপনি এই টারটার সস তৈরি করতে পারেন।

টারটার সস রেসিপির উপকরণঃ 

ঐতিহ্যবাহী টারটার সসের প্রাথমিক এবং প্রধান উপাদান হল মেয়োনিজ। যেহেতু আমি একটু হালকা করে বানাচ্ছি, তাই মেয়োনিজের সাথে গ্রীক দইয়ের মিশ্রণ ব্যবহার করবো। দই ব্যবহারের জন্য এই সসটি খেতে একটু বেশি টক আর ক্রিমি লাগবে। এই সসের অন্যান্য মূল উপাদানগুলি আরও বেশি স্বাদ বাড়ায়ঃ

  • লেবুর রস – এটি সসকে সুস্বাদু করে আর রঙটাও ভালো আসে।
  • কেফাজ এবং টুকরো করা ডিলের আচার – এরা সসে নোনতা, মিষ্টি একটা স্বাদ যোগ করে।
  • কালো সরিষা – এটি অতিরিক্ত টক এবং মরিচের মতো ঝাল একটা স্বাদ যোগ করবে।
  • তাজা রসুন এবং পেঁয়াজ গুঁড়া – তীব্র, সুস্বাদু গন্ধের জন্য।
  • সামুদ্রিক লবণ – সব স্বাদ একসাথে  করতে!

নীচের পরিমাপ সহ সম্পূর্ণ রেসিপি দেয়া আছে।

টারটার সসের কম্বিনেশন
টারটার সসের কম্বিনেশন

যেভাবে টারটার সস তৈরি করবেনঃ

রান্না করতে তৈরি তো? আপনাকে যা যা করতে হবে তা হলোঃ

  • প্রথমে উপকরণগুলিকে প্রস্তুত করে নিন। আচারগুলো কুচি করুন, কেফাজ কিমা করে নিন, রসুন কুচি করুন এবং মেয়োনিজ, দই, পেঁয়াজের গুঁড়া এবং সরিষা পরিমাপ করে নিন।
  • তারপর  সব একসাথে মিশিয়ে নিন। একটি ছোট বাটিতে উপাদানগুলি একসাথে নিয়ে ভালোভাবে নেড়ে মিশিয়ে নিন। স্বাদ মতো লবণ এবং মরিচ দিয়ে তাজা চিভ পাতা( এক ধরনের মসলা ফসল যা স্যুপ , সস ও সালাদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়)  কুচি দিয়ে সাজিয়ে দিন এবং  পরিবেশন করুন।

ব্যস, হয়ে গেলো আপনার টারটার সস !

বাড়িতে তৈরি টারটার সস পরিবেশন করার পরামর্শঃ

টারটার সস সাধারণত সামুদ্রিক খাবারের সাথে যেমন কাঁকড়ার ফ্রাই  , ভাজা মাছ এবং চিপসের মতো খাবারের সাথে পরিবেশন করে খাওয়া  যায়।  কিন্তু আমাদের বাড়িতে আমরা এসবের পরিবর্তে সবজি দিয়ে খাই! এটি উপভোগ করার জন্য আমাদের আরও কয়েকটি প্রিয় উপায় হলো:

  • মুচমুচে বেকড (বা এয়ার ফ্রাইড) সবজি দিয়েঃ আমি ভাজা মাছের বদলে মুচমুচে সিদ্ধ সবজি দিয়ে এই সস খেতে বেশি পছন্দ করি! আমি ভাজা ফুলকপি, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং বেকড জুকিনি ( ধুন্দল) চিপ্স  দিয়ে খাওয়ার জন্য ঘরে তৈরি এই টারটার সস পরিবেশন করতে পছন্দ করি।
  • কাঁচা সবজি প্ল্যাটারের সাথেঃ এটি আপনার প্রিয় তাজা সবজি এবং ছিটা  রুটির সাথে ডিপ সস হিসেবে পরিবেশন করুন।
  • ভাজা বা পোড়ানো সবজির সঙ্গেঃ গ্রিল করা ভুট্টা, ভাজা জুকিনি, ভাজা ফুলকপি, রোস্টেড ব্রোকলি বা গ্রিল করা নিরামিষী কাবাবের সাথে সসটি খেতে পারেন।
  • স্যান্ডউইচের সাথেঃ এটি সব ধরণের স্যান্ডউইচের খেতেই ভালো লাগে, তবে আমি বিশেষ করে ক্রিস্পি ফুলকপি  স্যান্ডউইচে রিমোল্যাড  সসের জায়গায় এটি দিতে পছন্দ করি। রিমোল্যাড সস হলো ঐতিহ্যবাহী এক ধরনের ফরাসী সস যা সাধারণত  মেয়নিজ, ভেষজ, কেপার , আচার  এই সব উপাদান দিয়ে তৈরি হয়।
  • বেকড করা  আলুর  মধ্যেঃ টক ক্রিমের বদলে গরম বেকড আলুর ভিতরে এই সসের চমৎকার একটা স্বাদ এনে দেয়।

আপনি কিভাবে বাড়িতে তৈরি টারটার সস ব্যবহার করতে চান?  তাহলে আমাকে কমেন্টে জানাতে পারেন।

টারটার সসের সহজ ও মজাদার রেসিপি
টারটার সসের সহজ ও মজাদার রেসিপি

টারটার সস তৈরির পদ্ধতি (উপকরণের পরিমাপসহ)

প্রস্তুতি সময়: ১০ মিনিট
 থেকে ৬ জনের পরিবেশন উপযোগী 
ঘরে তৈরি এই টারটার সস রেসিপিটি ক্রিমি, টক মিষ্টি স্বাদের এবং তৈরি করা খুব সহজ! এটি পরিবেশন করার বিভিন্ন উপায় পোস্টের উপরে বলা হয়েছে।

উপকরণঃ

  • ১/৪ কাপ মেয়োনিজ
  • ১/৩ কাপ ননীযুক্ত দুধের  দই
  • টেবিল চামচ লেবুর রস
  • টেবিল চামচ কিমা করা কেফাজ
  • টেবিল চামচ ডিলের আচার (কুচি করা)
  • চা চামচ কালো সরিষা
  • ১ কোয়া রসুনের ফালি (কুচি করা)
  • ১/৪ চা চামচ পেঁয়াজ গুঁড়া
  • সামুদ্রিক লবণ এবং তাজা কালো মরিচ
  • চিভ পাতা , সাজানোর  জন্য

নির্দেশনা

১। একটি ছোট বাটিতে, মেয়োনিজ, দই, লেবুর রস, কেফাজ, আচার, সরিষা, রসুন, পেঁয়াজ গুঁড়া এবং গোলমরিচ একসাথে নেড়ে মিশিয়ে নিন। স্বাদমতো লবণ যোগ করুন।
২। পছন্দ মতো  চিভ পাতা দিয়ে সাজান, এবং পোস্টের লেখা যেকোনো উপায়ে পরিবেশন করুন।